(পরী মণি)
চাঁদনী রাত ,
চাঁদনী রাত ,
গলে গলে পড়ছে জোস্না ,
চারদিক নীরব এমনকি ঝিঁঝিঁ
পোকার শব্দ পর্যন্ত নেই ।
বড় বড় কাঁশফুলের গাছ ,
সাদা সাদা কাঁশফুলের রাজত্ব চারপাশে ,
যতদুর চোঁখ যায় কেবল সাদা আর সাদা ।
শুদ্ধতার , পবিত্রতার সীমাহীন এক স্বর্গীয় অনুভুতি
আবিরের মনে দোলা দিয়ে যাচ্ছে বারবার ।
জায়গাটা ওর কাছে খুবই পরিচিত মনে হচ্ছে
কিন্তু আগে কখনো এসেছে বলে মনে হচ্ছে না ।
কাঁশবাগানের ভিতর দিয়ে সরু একটা পথ
চলে গেছে এঁকেবেঁকে সেই পথ ধরেই হেঁটে যাচ্ছে আবির ,
যদি অনন্তকাল ধরে এ পথে হাঁটা যেত ,
যদি এসময় পরী মণিও সাথে থাকতো কতইনা ভালো হত !
পরীমণির কথা মনে পড়তেই মামার মন খারাপ হয়ে গেল ।
মামা অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে ,
মামা অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে ,
পরীমণি ওর ক্লাসমেট ।
পরীমণির বাবা সরকারী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ,
ঢাকা থেকে বদলি হয়ে তিনি এই মফস্বল শহরে এসেছেন ।
তাই পরীমণিকেও বাধ্য হয়েই এই স্কুলে ভর্তি হতে হয়েছে ।
পরীমণি খুবই মেধাবী ছাত্রী
ঢাকার এক নামকরা স্কুলেই ওর রোল ছিল এক ।
পরীমণি আসার আগে মামা ছিল ক্লাসের সেরা ছাত্র ,
কিন্তু যখন ১ম সাময়িকের রেজাল্ট বেরুল
তখন সবার চোঁখ কপালে উঠে গেল !
কারন প্রতিটি সাবজেক্টেই পরীমণি ৯৫ এর উপর নাম্বার পেল !
আর অংকে পেল ১০০ তে ১০০ !
মামা ভাবতেই পারেনা অংকে কেউ ১০০ পায় কি করে !
ও কখনো ৬০ এর উপর পায়নি , আর এবার পেয়েছে ৫৮ ।
পরীমণি মেয়েটা দেখতেও ছিল পরীমণির মত ,
পরীমণি মেয়েটা দেখতেও ছিল পরীমণির মত ,
ক্লাসের সবার সাথেই ওর ভালো সম্পর্ক একমাত্র মামা ছাড়া ।
মামা কিছুতেই পরীমণিকে সহ্য করতে পারছিল না ।
কারন ওর মান সম্মান একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে মেয়েটা !
এতদিন ও ছিল সেরা ছাত্র স্যাররা সবাই ওকে আদর করতো ,
কিন্তু এখন ঐ মেয়েটা কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে !
মামা কথা না বললে কি হবে পরীমণি কিন্তু
মামা কথা না বললে কি হবে পরীমণি কিন্তু
সেধেসেধেই মামার সাথে কথা বলতো ,
প্রথম প্রথম ও উত্তর দিত না কিন্তু
পরীমণি এমন সুন্দর করে কথা বলে জবাব না দিয়ে থাকা যায় না ।
মামার মাঝে মাঝে ভাবে এত সুন্দর করে কথা বলে কিভাবে মেয়েটি !
ও আয়নার সামনে দাড়িয়ে কয়েকবার চেষ্টা করেছিল
পরীমণির মত করে কথা বলতে
কিন্তু নিজের কথা শুনে নিজেরই হাসি পেত !
মামা ধীরে ধীরে পরীমণির প্রতি দুর্বল হতে লাগলো ,
মামা ধীরে ধীরে পরীমণির প্রতি দুর্বল হতে লাগলো ,
মামার ধারনা ছিল পরীমণিও মনে হয় তার মত করেই ভাবছে ।
২য় সাময়িক পরিক্ষার কিছুদিন আগে মামা জানতে পারলো
২য় সাময়িক পরিক্ষার কিছুদিন আগে মামা জানতে পারলো
পরীমণির বাবা আবার ঢাকায় বদলি হয়ে গেছে ।
কয়েক দিনের মধ্যেই ওরা চলে যাবে ।
মাা একসময় যে পরীমণির সাথে কথা বলতোনা
মাা একসময় যে পরীমণির সাথে কথা বলতোনা
এখন সেই পরীমণি চলে যাবে শুনে
ওর নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে ।
মামা : তুমি নাকি ঢাকায় চলে যাচ্ছ ?
পরীমি : হ্যা , বাবা বদলি হয়ে গেছেতো তাই ।
মামা : তুমি নাকি ঢাকায় চলে যাচ্ছ ?
পরীমি : হ্যা , বাবা বদলি হয়ে গেছেতো তাই ।
তুমি নিশ্চয় খুব খুশি , তোমার রোল আবার এক হবে ।
মামা চোঁখ দুটি টলমল করতে লাগলো ,
মামা চোঁখ দুটি টলমল করতে লাগলো ,
আবার একটা মেয়ের সামনে ও প্রায় কেঁদে দিচ্ছে
এটা ভেবে লজ্জাও পাচ্ছে ।
শেষ পর্যন্ত লজ্জারই জয় হল !
ও কোন রকমে কাঁন্না আটকাল ।
তারপর পরীমণির হাতে একটা কাগজ দিয়ে দৌড়ে পালাল ।
ভালো ছাত্রী পরীমণি ,
তুমি অনেক সুন্দর ,
ভালো ছাত্রী পরীমণি ,
তুমি অনেক সুন্দর ,
তোমার কথাগুলো আরও সুন্দর ।
এত সুন্দর করে কেউ কথা বলতে পারে আমি জানতাম না ।
তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে ,
তুমি যদি আমার চেয়ে খারাপ ছাত্রী হতে
তাহলে তোমাকে আমি "I love you" কথাটা বলতাম ।
কিন্তু তুমি পড়ালেখায় আমার চেয়ে অনেক অনেক ভালো তাই
"I love you" বলতে আমার লজ্জা লাগে ।
তাছাড়া তোমরা শহরে থাক আর অনেক সুন্দর করে কথা বল ।
কিন্তু তুমি খুব ভালো মেয়ে ।
ইতি
খারাপ ছাত্র মামা ।
দাড়াও ! দাড়াও ! আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি ।
ইতি
খারাপ ছাত্র মামা ।
দাড়াও ! দাড়াও ! আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি ।
আমি যে তোমাকে এই চিঠিটা দিয়েছি কাউকে বলনা ,
তাহলে সবাই আমাকে খারাপ মনে করবে । ।
আগামীকাল পরীণি চলে যাবে ,
আগামীকাল পরীণি চলে যাবে ,
মামার সাথে আজই ওর শেষ ক্লাস
কিন্তু এই কয়দিনে চিঠির বিষয়ে
মামার সাথে পরীমণি কোন কথাই বলেনি ।
ক্লাস শেষে পরীমণি সবার কাছ থেকে বিদায় নিল
তারপর মামার সাথে কিছুক্ষন কথা বলল . .
পরীমণি: ভালো থেকো মামা ,
পরীমণি: ভালো থেকো মামা ,
কাল আমরা চলে যাচ্ছি ।
এখন আমাদের পড়ালেখা করার সময় ,
আমার আব্বু আম্মু চায় আমি যেন ডাক্তার হই ,
তাই আমাকে ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে ।
আর তুমিও খুব ভালো ছেলে
চেষ্টা করলে অনেক ভালো রেজাল্ট করতে পারবে ।
তাহলে ঢাকায় গিয়ে ভালো কলেজে পড়তে পারবে
তখন হয়ত আমার সাথে আবার দেখা হয়ে যেতে পারে ।
মামা মনে মনে ভাবছে কি সুন্দর করে
কথা বলছে মেয়েটা , কত কিছু নিয়ে ভাবছে । । ।
মামা পরীমণির কথা ভাবছে আর সেই সরু পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে ,
মামা পরীমণির কথা ভাবছে আর সেই সরু পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে ,
পরীমণির সাথে কাটানো সময়গুলোর কথা বারবার মনে পড়ছে ।
হঠাত্ করে কাঁশবনে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করলো !
হঠাত্ করে কাঁশবনে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করলো !
হাজার হাজার জোঁনাকী কোথা থেকে এসে জুটেছে পুরো কাঁশবন জুড়ে !
হঠাত্ ও খেয়াল করলো আকাশ থেকে একটা
আলোর ছটা ক্রমশ ওর দিকে এগিয়ে আসছে !
কাছে আসতেই ও চিত্কার দিয়ে বলে উঠলো পরীমণি তুমি ? ?
পরীমণি কোন কথা বললনা ,
যখনি ও পরীমণিকে ছুতে চাইল ওমনি পরী আকাশে মিলিয়ে গেল ! !
আর সাথে সাথেই মামার ঘুম ভেংগে গেল ।
পরীমণি ঢাকা চলে গেছে প্রায় তিন মাস হল ,
পরীমণি ঢাকা চলে গেছে প্রায় তিন মাস হল ,
তারপর থেকে মামার প্রায় প্রতি রাতেই এই স্বপ্নটা দেখে ।
কিন্তু আজ মামার একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে ।
এভাবে স্বপ্ন দেখে আর না ,
"স্বপ্নের পরীমণিকে হয়ত ছোয়া যায় না
কিন্তু বাস্তবের পরীমণিকে ছোয়া যায় ,
অন্তত চেষ্টাতো করা যায়"
আজ থেকে ও আরও ভালোভাবে পড়াশুনা করবে
আজ থেকে ও আরও ভালোভাবে পড়াশুনা করবে
"নিজের জন্য , পরীমণিকে ছোয়ার জন্য"
-ব্লগার টিপু মামা-
No comments:
Post a Comment